রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ,সামাজিক , সাংস্কৃতিক, নৃ-বিজ্ঞান, ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক আচার ব্যাবহারঃ-
ঘর-বাড়ি ও পারিপার্শ্বিকঃ- প্রাচীনকাল থেকেই ওসমানীনগর উপজেলারঅধিবাসীগণ প্রাকৃতিক পরিবেশে বংশানুক্রমে আবাসগৃহ নির্মান করে বসবাস করতেন। এই উপজেলার অধিকাংশ জায়গা জুড়ে নদী, খাল বিল আর হাওড় দ্বারা বেষ্টিত থাকার কারনে প্রাচীন কালে এই জনপদে ঘরবাড়ি নির্মান করতে অনেক অসুবিদার সম্মুখীন হতে হয়েছে, যার ফলশ্রম্নতিতে এখানকার জনগণ প্রাচীনকালে নির্মানের উপকরণ হিসেবে কাঠ ও বাঁশের খুঁটির সংঙ্গে খড় বা বাঁশের ছাউনি ও বেড়া দ্বারা ঘরবাড়ি গুলো নির্মান করে বসবাস করতেন। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রবাসী অধ্যুষিত ওসমানীনগর উপজেলার বর্তমান ঘরবাড়ি গুলো বাহারী দালান দ্বারা বেষ্টিত প্রায়,তবে কিছু সংখ্যক বাড়িতে এখনো প্রাচীন ঐতিহ্যের বাহক কাঠ ও বাঁশের খুঁটির সংঙ্গে খড় বা বাঁশের ছাউনি ও বেড়া দ্বারা ঘরবাড়ি দেখা যায়।
পোশাক পরিচ্ছেদঃ-
পুরম্নষঃ এই উপজেলার অধিবাসীদের পোশাক পরিচ্ছেদে রম্নচিশীলতার পরিচয় পাওয়া যায়,প্রাচীন কালে এই উপজেলার পুরম্নষেরা ধুতি, পাজামা, পাঞ্জাবী, টুপি ,লুঙ্গি, কোর্তা ,চাদর, নিমা ,মিরজাই ,গিলাফ,শাল,আছকান,চাপকান,পাগড়ী ইত্যাদি ব্যবহার করতো। পায়ে কাঠের তৈরী খড়ম ব্যবহার করতো,এই খড়মের মধ্যখানের গুটিকে বলা হতো ’’বগলা’’, কিন্তু বিয়ে-সাদীতে চামড়ার জুতোর প্রচলন ছিল,এক জোড়া জুতো গ্রামের অনেকের বা বংশানুক্রমে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে এই উপজেলার পুরম্নষেরা লুঙ্গি,টুপি,ধুতি ,পাজামা,পাঞ্জাবী, এবং প্যান্ট-শার্ট ব্যবহার করে।
মহিলাঃ প্রাচীন কালে এই উপজেলার মহিলারা টুকরো ধুতি, শাড়ি, ছায়া,ফুলহাতা বস্নাউজ,চুড়িদার,কূর্তা,চাদর ইত্যাদি ব্যবহার করতো,আর অলংকার হিসেবে স্বর্ণ,রূপা,তামা ইত্যাদি দিয়ে তৈরী কানফুল,টেম,নথ ,বেসর,পাঁচলরী,সাথলরী,বাজবন্দু গুঙ্গুর,চুড়ি এবং পায়ে নুপুর পড়ার প্রচলন ছিল।জুতোর ÿÿত্রে মেয়েদের জন্য রাবারের বেল্ট লাগানো খড়মের প্রচলন ছিল। বর্তমান সময়ে অলংকারের ব্যবহার ঠিক থাকলে ও শাড়ী,স্যালোয়ার,কামিজ ও চামড়ার জুতো ব্যবহার করে।
অর্থনৈতিক অবস্থাঃ- কৃষি নির্ভর অর্থনৈতিক অঞ্চল ওসমানীনগরের প্রতিটি পরিবারই কিছু না কিছু কৃষির সাথে জড়িত ,তাছাড়া ও এই উপজেলার কিছু সংখ্যক লোকজন মৎস আরোহন করে জীবিকা নির্বাহ করে। প্রবাসী অধ্যুষিত ওসমানীনগর উপজেলার বেশীর ভাগ পরিবার প্রবাসীদের আয়ের উপর নির্ভরশীল। ওসমানীনগর উপজেলার বেশীর ভাগ মানুষ প্রবাসী থাকায় রেমিটেন্স প্রেরণের মাধ্যমে সিলেট জেলা তথা দেশের অর্থনৈতিক উন্নায়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।
নৃ-তাত্বিক বৈশিষ্টঃ- সূদুর অতীতকাল থেকে লÿ করলে দেখা যায় যে, দÿÿন সিলেটের ভাঙ্গা গড়া, বোদ্ধ সংস্কৃতি, অগ্রহার, ব্রাহ্মন বসতি ইত্যাদি অতি নিকট থেকে অবলোকন করেছে এ অঞ্চল এবং প্রবাভিত ও হয়েছে সময়ে সময়ে। প্রাচীন গৌড় লাউড়ের সীমানায এর অবস্থান। যদিও গৌড় রাজ্যের অমর্ত্মগত ছিল এ এলাকা। হয়রত শাহজালাল (রঃ) এর গৌড় বিজয়কালে তার প্রথম পদস্পর্শে ধন্য হয়েছে এ অঞ্চলের মাটি ও মানুষ। সিলেট জেলার অন্যতম বৃহৎ এই উপজেলা বর্তমান সিলেট জেলার অন্যতম প্রবেশদ্বার এবং একটি গ্ররম্নত্বপূর্ণ অঞ্চল।
লোক সংস্কৃতিঃ- এই অঞ্চলের লোক সংস্কৃতির উলেস্নখযোগ্য দিক হলো -ঘাটুগান, নৌকাবাইচ, সারীগান, মরমীগান, বিয়েরগান, ধামাইল, পলোবাওয়া,হইর দেওয়া, বড়শী বাওয়া,পাখি ধরা,ষাঁড়ের লড়াই ,ঘোড়দৌড়,মেলা , যাত্রা ,বাউলগান, মালজোড়াগান, পুঁথিপড়া, গাজীরগান ইত্যাদি।এই অঞ্চলে প্রায় দেড় শতাধিক আধ্যাত্ম সাধক ছিলেন,তন্মধ্যে কয়েকজন খ্যাতনামা গীতিকার ছিলেন। এখানে আধ্যাত্মিক তথা মরমী গানকে ফকিরী-মারফতী গান ও বলা হয়।
এ এলাকার জনপ্রিয় কিছু আধ্যাত্মিক সংগীতের উদাহরণ নিমেণ দেয়া হলো .....
Ø নিশিতে যাইও ফুল বনে রে ভ্রমরা, নিশিতে যাইও ফুল বনে
নয় দরজা বন্ধ করি লইও ফুলের গন্ধ
অমত্মরে জপিও বন্ধের নাম ও ভমরা, নিশিতে যাইও ফুল বনে।
Ø ওগো সখি বৃন্দে আমার প্রাণ যায় প্রাণ বন্দু বিহণে
একা ঘরে শুইয়া থাকি,শুইলে স্বপন ও দেখি
ও আমি জাগিয়া না পাইলাম চিকন কালারে।
Ø প্রাণ সখিরে ঐ শোন কদম্ব তলে বংশী বাজায় কে
বংশী বাজায় কেরে সখী, বংশবিাজায় কে
আমার মাথার বেনী খুইলা দিমু তারে আইনা দে।
এ এলাকার জনপ্রিয় কিছু বিয়ের গানের উদাহরণ নিমেণ দেয়া হলো .....
Ø দামান্দ বেটা ময়ুর জাতি টাউনে টাউনে ঘুরাইন গো-দামান্দ লন্ডনী
টাউন বাছি লইয়া ইয়ারিং কানেতেমিলাইয়া গো-দামান্দ লন্ডনী
Ø তুমি রাইত আইও পরানের বন্দু দিনে করি মানা
তোমার লাইগা সাজাই রাখরি ফুলের ও বিছানা
তুমি রাইত আইও পরানের বন্দু দিনে করি মানা।
Ø ও তোমরা কুঞ্জ সাজাও গা, আজ আমার প্রাণ নাথ আসিতে পারে..
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS