ওসমানীনগর উপজেলার উলেস্নখযোগ্য ঐতিহাসিক স্থান, নিদর্শন ও পুরাকীর্তিঃ
১. মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি বঙ্গবীর জেনারেল এম এ জি ওসমানী’র বাড়িঃ
মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি বঙ্গবীর জেনারেল মোঃ আতাউল গণি ওসমানী’র পৈতৃক নিবাস এই উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নে অবস্থিত। মহান ব্যক্তিত্বের অধিকারী জেনারেল এম এ জি ওসমানী বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও পরে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশেষ অবদান রাখেন। ইষ্ট পাকিসত্মান রাইফেলস এর প্রতিষ্ঠাতা ও মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্রবাহিনী, মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক হিসেবে দেশকে শত্রম্নমুক্ত করে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। এই মহান ব্যক্তির পৈত্রিক নিবাস এ উপজেলার ঐতিহ্য বহন করে এবং যা এই উপজেলার মানুষের গর্বের প্রতীক।
২. গায়েবী মসজিদঃ
হযরত শাহজালাল (রাঃ) এর সিলেট আগমন এর পূর্বে সিলেটের টুলটিকরে হযরত বোরহান উদ্দিন (রাঃ) ওরফে নুরম্নদ্দিন সিলেটে বসতি স্থাপন করেন। হযরত শাহজালাল (রাঃ) এর সিলেট আগমন এর পূর্বে উছমানপুর ইউনিয়নের এই গায়েবী মসজিদটি ছিল। মসজিদটির নির্মাতা সম্পর্কে সু-স্পষ্ট কোনো ধারণা আজও পাওয়া যায়নি। সম্ভবতঃ প্রাচীনকালে নির্মিত এই মসজিদটি একসময় বন-জঙ্গল ও উই পোকার মাটিতে ঢাকা পড়েছিল। হযরত শাহজালাল (রাঃ) এর সিলেট আগমনকালে তার অন্যতম সফরসঙ্গী সাধক সৈয়দ উম্মর ছমর খন্দের তিন ছেলের মধ্যে সৈয়দ মাহবুব খন্দকার, সৈয়দ তাহির খন্দকার এবং অপর সফরসঙ্গী সৈয়দ ওসমান বোগদাদী এই তিনজন বর্তমান উছমানপুরে আসেন তখন এ এলাকায় হিন্দু ধর্মের পুরকায়স্থ জনগোষ্টির বসবাস ছিল। তিনজন আউলিয়া বসবাসের জন্য স্থান খুঁজেন এবং একটি উচু টিলা দেখতে পেয়ে সেখানে মাটি খুড়া শুরম্ন করলেন, অনেÿন মাটি কাটার পর হঠাৎ কোদালের মাথায় কি একটা বস্ত্তর সংস্পর্শে একটা আওয়াজ হলো। ভেবে চিমেত্ম কিছুÿণ মাটি কাটার পর বেরোল একটি পাকা অংশ। তারা ভাবলেন বোধহয় তাদের উপাসনালয়ের স্থান মসজিদ হবে। অপরদিকে হিন্দু ধর্মের পুরকায়স্থ জনগোষ্টির দাবি ইহা তাদের মন্দির। দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে মত পার্থক্যের পর তারা এই সিদ্ধামেত্ম উপনিত হন যে যাদের উপাসনালয় পাওয়া যাবে শুধুমাত্র তারা এই অঞ্চলে বসবাস করবে। উভয় পÿÿর সম্মতিক্রমে টিলা কাটা পুনরায় শুরম্ন হলো এবং পরিশেষে আত্মপ্রকাশ ঘটলো আজকের এই গায়বী মসজিদ এবং সৈয়দ ওসমান বোগদাদী’র নামানুসারে এই গ্রামের নামকরণ করা হয় উসমানপুর। প্রায় আড়াই হাত দেয়ালের প্রস্থ এই মসজিদটিতে শিল্পকলার অনেক পুরণো কারম্নকার্য বিদ্যমান। ওসমানীনগর উপজেলার উসমানপুর ইউনিয়নে তাজপুর-বালাগঞ্জ রোডের পাশে এই মসজিদটি অবস্থিত।
৩। প্রাচীন পাটাঃ
ওসমানীনগর উপজেলার উছমানপুর ইউনিয়নে থানাগাঁও গ্রামে’র মসজিদে এই পাটা অবস্থিত। ধারনা করা হয় এই গ্রামে আপন দুই ভাই নিকা মিয়া (রাঃ) ও হযরত কনু মিয়া (রাঃ) প্রাচীন গুহায় (হুজরা বা মসজিদে) বসবাস করতেন। এই গুহার ধ্বংস স্থলে নতুন মসজিন নির্মান করা হয়েছে। এই মসজিদে প্রাচীনকালের একটি শিলা (পাটা) বিদ্যমান। থানাগাঁইয়া আটি খলা উপাখ্যান উক্ত দুই ভাইয়ের কীর্তি।
৪। প্রাচীন শিলালিপিঃ
ওসমানীনগর উপজেলার বুরম্নঙ্গাবাজার ইউনিয়নে’র পশ্চিম তিলাপাড়া গ্রামে অবস্থিত প্রাচীন এই মসজিদটি ইলিয়াস শাহী বংশের স্বাধীন সুলতান নাসিরম্নদ্দিন আহমদ শাহ এর (১৪২২) পুত্র রম্নকন উদ্দিন বরবক শাহ (১৪৫৯) তারপুত্র শামসুদ্দীন আবু মুহাম্মদ ইউসুফ শাহ (১৪৮১) এর উজীর (শের-ই-লস্কর) মালিক উদ্দীন ওরফে মালিক সিকন্দর এই প্রাচীন মসজিদটিঁ নির্মান করেন । ১৪৭৯ সালে নির্মিত এই মসজিদটির ধ্বংসাবশেষের নিচ থেকে উদ্ধার করা শিলালিপিটি বর্তমানে ও রÿÿত আছে। শিলালিপিটি বৈষ্ণব ধর্মেও প্রবর্তক শ্রী চৈতন্য দেবের জন্মেও ০৬ বছর পূর্বেকার বলে ধারনা করা হয়। উলেস্নখ্য যে এই স্থানের উত্তর পশ্চিমে বুড়ি বরাকের ডান তীরে বুরম্নঙ্গা গ্রামে প্রাচীনকালে ব্রাহ্মনদের সমৃদ্ধ বসতি বিদ্যমান ছিল।
৫। গণকবরঃ- ওসমানীনগর উপজেলায় দুইটি গণকবর রয়েছে।
ক) পশ্চিমপৈলন পুর ইউনিয়নের ভাটাপাড়া ।
খ) বুরম্নঙ্গা বাজার ইউনিয়নের বুরম্নঙ্গাবাজার।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস